আমার বাবা রাজাকার তাতে আমার কি?? তিনি রাজাকার ছিলেন এ অপবাদের দায় আমি কেন নিবো? আমি তো তখন জন্ম গ্রহণ করিনি! আমার বাবা স্বাধীনতার বিপক্ষে আমি তো বিপক্ষে না। এ অপবাদ আমি নিবো না। রাজাকার বাবার প্রায় সন্তানরা এটাই বলে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা বাবার সন্তানরা বাবার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, কৌটা সুবিধা থেকে শুরু করে সবরকম স্বাদ গ্রহণ করে আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা করে গর্ব বিলায়। যার বাবা মুক্তিযোদ্বা তার সন্তানরা স্বাদ গ্রহণ করে রাজাকার বাবার সন্তানরা কেন অপবাদ গ্রহণ করবেন না? অবশ্যই আপনি আপনার বাবার অপবাদ মেনে নিয়ে বলতে থাকেন আমার বাবা রাজাকার।
আমি আমার বাবাকে ঘৃণা করি, তবে আমি রাজাকার না, আমি স্বাধীনতার পক্ষে। পক্ষান্তরে রাজাকার বাবাকে রাজাকার নয় বলে দাবি করে পক্ষে অবস্থান করলে বাবার সেই অপবাদের যোগ্য উত্তরসূরী আপনিও এটা মেনে নিতে হবে। রাজাকারের তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপটে বিষয়টি আলোকপাত করার মনস্থির করি। মুক্তিযোদ্বা বাবার সন্তানদের স্বাদ নিতে যেমন কোন দ্বিধা নেই, আপনি রাজাকারের সন্তান হলে আপনাকে সেই অপবাদ নিতেই হবে। তবে আপনি দণ্ডিত হবেন না, যদি আপনি স্বীকার করেন।
এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি, ৪৯তম বিজয় দিবসের আগে রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছেই। এ প্রসঙ্গে আমি বলবো রাজাকারদের তালিকায় কিছু মুক্তিযোদ্ধার নাম, ভাষা সৈনিকের নাম ঢুকিয়ে দিয়ে আসল রাজাকারদের নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করা হয়েছে। যা প্রশাসনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা রাজাকারের উত্তরসূরীদের কাজ বলে মনে হচ্ছে আমার। বলতে গেলে এটি একটি বড় রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র। যা ইতিহাসের খলনায়কদের দায়মুক্ত করার দু:সাহসও বটে। কিভাবে রাজাকারের এ ভূগর্ভে (লিস্টে) মুক্তিযোদ্ধাদের নাম কৌশলে ঢুকিয়ে দিয়ে পুরো বিষয়টিকে বিতর্কিত করলেন!! এ দায় কে নিবে? শস্যের মধ্যে এ ভূত কে তাড়াবে। ইতিহাস কখনো কাউকে ক্ষমা করে না। তাই আসল রাজাকার ও আসল মুক্তিযোদ্ধাদের নির্ধারণ করার সময় এখন। তা না হলে এ দুই বিষয় নিয়ে অন্ধকারে থাকবে ভবিষ্যত প্রজন্ম। ৫০তম বিজয় উৎসবের আগেই এ বিষয়টির ফয়সলা হওয়া, সংস্কার হওয়া, সঠিক রাজাকার ও সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ হবে বলে আশা করি। যেন ঘোলা জলে কেউ মাছ শিকার করতে না পারে। এটি রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে রাষ্ট্রযন্ত্রের বড় চ্যালেঞ্জ।
লেখক-বাবলু চৌধুরী,